সোমবার ভোরে ঘড়ির কাঁটা স্থানীয় সময় অনুসারে যখন ৪টার ঘরে. ঠিক সেই মুহূর্তে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা। ১৯৩৯ সালের পর তুরস্ক এমন ভয়াবহ ভূকম্প দেখেনি। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। কম্পনের উৎসস্থল দক্ষিণ তুরস্কে। গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ১৮ কিলোমিটার গভীরে।

প্রথম কম্পনের ১১ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় বার কেঁপে ওঠে লেবানন, সিরিয়া ও সাইপ্রাসের বিভিন্ন অংশ। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)-র মতে, এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬ দশমিক ৭। ১৯৩৯ সালের পর তুরস্ক এমন ভয়াবহ ভূকম্প দেখেনি। ভূমিকম্পের ফলে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়া। উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক মৃতদেহ। কোনো কোনো পরিবারে সব সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। শোক পালন করার মতো আত্মীয়-পরিজন নেই অনেকের।

ভেঙে পড়েছে বহু বাড়িঘর। তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে চার হাজার ৩৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ইউনুস সেজার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দুই হাজার ৯২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি আরও বলেছেন, এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৮৩৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে— ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪৫১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহতাবস্থায় তিন হাজার ৫৩১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সয়োলু জানিয়েছেন, বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছে। তবু আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এগিয়ে আসবে বলে অনুমান করা যায়। তাদের এমার্জেন্সি রেসপন্স কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (ইআরসিসি)-এর কাছে সাহায্য চেয়েছেন সুলেমান।